Tuesday, 2 December 2014

কতিপয় কবীরা গুনাহের বিস্তারিত বিবরণ ১৯-২৮

  • ১৯. জোর-জুলুম করে অর্থ বা অতর্কিতভাবে কোন মুসলমান বা কোন সংখ্যালঘুর ছোট কিংবা বড় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হরণ করা বা ভোগ দখল করা কবীরা গুনাহ।

    ২০. অনাথ এতিমের মাল বা নিরাশ্রয় বিধবার মাল খাওয়া কবীরা গুনাহ। এতিমও বিধবার মাল খাওয়া যেমন মহাপাপ, তদ্রূপ একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে বিধবার খেদমত করা মহাপুণ্যের কাজ।

    ২১. আল্লাহর ঘর যিয়ারতকারী তথা হজ্জ যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করা কবীরা গুনাহ।

    ২২. মিথ্যা কসম খাওয়া কবীরা গুনাহ।

    ২৩. কোন মুসলমানকে গালি দেওয়া, মুসলমানে মুসলমানে গালাগালি করা কবীরা গুনাহ। কারণ মিথ্যা তুহমাত ও অশ্লীল কথাবার্তা প্রয়োগ-এই দু’টি পাপের দ্বারা গালি তৈরি হয়। হাদীসে আছে,“কোন মুসলমানকে যে গালি দিবে, সে ফাসিক হয়ে যাবে।”

    ২৪. জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করা কবীরা গুনাহ। জিহাদের আসল অর্থ-আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা। এমনকি যদি দ্বীনের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে প্রাণ দিতে হয়, তাতেও কুন্ঠাবোধ না করা। দ্বীনের দুশমনরা সত্য ধর্মকে দুনিয়া থেকে মুছে ফেলার জন্য অনেক দূর থেকে অনেক সূক্ষ্ণ কূটনৈতিক চেষ্টা-তদবির করে সেগুলো উদ্ধার করে। সেসবের প্রতিকার করা জিহাদের পর্যায়ভুক্ত। আর যে জামানায় বৈধ যে উপায়ে দ্বীন জারি করা যায় এবং দ্বীনের দুশমনদেরকে দুর্বল করা যায়, সে জামানায় সেই কাজই জিহাদের অন্তর্ভুক্ত। সেরূপ দ্বীনের খিদমত হতেও পলায়ন করা জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করার শামিল ও সমতুল্য গুনাহর কাজ।

    ২৫. ধোঁকা দেওয়া বিশেষত শাসনকর্তা ও বিচারকর্তা কর্তৃক জনসাধারণকে ধোঁকা দেওয়া মারাত্মক কবীরা গুনাহ। কারবারের মধ্যে, বেচা-কেনার মধ্যে ধোঁকা দেয়াও মহাপাপ। কিন্তু শাসক বা বিচারক হয়ে ধোঁকা দেওয়ার তুলনা নেই।

    ২৬. অহংকার করা কবীরা গুনাহ। পদের অহমিকা বা ধন-সম্পদের গৌরবে গরিবদেরকে তুচ্ছ মনে করা বা উচ্চ বংশে জন্মগ্রহণ করায় অন্য কোন বংশীয় লোকদেরকে হেকারত বা তুচ্ছ জ্ঞান করা, যেমন যারা কাপড় বুনে, তাদেরকে জোলা বলে তুচ্ছ করা, যারা তেল উৎপাদন করে তাদেরকে তেলি বলে তুচ্ছ করা, যারা কৃষিকাজ করে, তাদেরকে চাষা বলে হেকারত করা, যারা আরবীতে ধর্মবিদ্যা চর্চা করে তাদেরকে মোল্লা বলে তুচ্ছ করা ইত্যাদি অহংকার-তাকাব্বুরও কবীরা গুনাহ বা মহাপাপের অন্তর্ভুক্ত।

    ২৭. বাদ্য-বাজনাসহ নাচ-গান করা কবীরা গুনাহ। হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বর্বরতার যুগের কু-প্রথা ও কু-সংস্কারসমূহ নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য আল্লাহ তা‘আলা আমাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। যেমন-বাঁশি, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি। [সূত্র : আলকামেল ফিজ্জুআফা খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪১১৮]

    ২৮. ডাকাতি করা, লুন্ঠন করা কবীরা গুনাহ। প্রত্যেক মুসলমানের এবং ইসলামী রাষ্ট্রের অনুগত প্রত্যেক অমুসলমান নাগরিকের জান-মাল ও ইজ্জত পবিত্র আমানত। এ আইন ভঙ্গ করে কারো জান-মাল বা ইজ্জত হরণ করা কবীরা গুনাহ।
  • শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতী মনসূরুল হক (দা:বা:)জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া, মুহাম্মাদপুর-ঢাকা।

No comments:

Post a Comment