৩০. জায়গা-জমির সীমানা নষ্ট করা কবীরা গুনাহ। হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জায়গা-জমির সীমানা যে নষ্ট করবে, তার ওপর লানত।”
হাদীসে আরো বর্ণিত আছে, “যে ব্যক্তি জায়গা-জমির সীমানা নষ্ট করে অন্যের এক বিঘত জমি হরণ করবে, কিয়ামতের দিন তার স্কন্ধে এই পরিমাণ সাত তবক জমিন চাপিয়ে দেওয়া হবে।” [সূত্র : মুসলিম শরীফ, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩২]
৩১. শ্রমিকের মজুরি কম দেওয়া কবীরা গুনাহ। হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে লোক শ্রমিকের শ্রমের পূর্ণ মজুরি দেয় না বা পূর্ণ মজুরি দিতে টাল-বাহানা করে, কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে আল্লাহর দরবারে দাঁড়াব।” হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাষ্ট্রানুগত সংখ্যালঘুর ওপর জুলুমকারী সম্পর্কেও এরূপ উক্তি করেছেন।
৩২. মাপে কম দেওয়া কবীরা গুনাহ। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-“যারা মাপে কম দিবে, তাদের জন্য ওয়ায়েল নামক দোযখ নির্ধারিত রয়েছে।”
৩৩. দ্রব্য সামগ্রীতে ভেজাল মিশ্রিত করা কবীরা গুনাহ।
৩৪. খরিদ্দারকে ধোঁকা দেওয়া কবীরা গুনাহ। হাদীস শরীফে আছে- “যে ধোঁকা দিবে, সে আমার উম্মত নয়।”
৩৫. স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে, শর্তের সাথে হিলা করে পুনরায় তাকে নিয়ে ঘর-সংসার করা কবীরা গুনাহ। একে তো তালাক কথাটাই এমন, যা অত্যন্ত ঘৃণিত। কেবলমাত্র জরুরতের কারণেএটাকে জায়িয রাখা হয়েছে। নতুবা এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর নেই। তাই হাদীস শরীফে বলা হয়েছে- “যত রকমের জায়িয জিনিস আছে, তন্মধ্যে সবচেয়ে খারাপ জিনিস হচ্ছে তালাক।” [সূত্র : আবু দাউদ শরীফ খন্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯৬] তারপর একসঙ্গে তিন তালাক দিয়ে ফেলা, এটা আরো খারাপ। আবার তিন তালাকের দ্বারা যে স্ত্রী হারামে মোগাল্লাযা হয়ে গেছে, তাকে শর্ত করে হিলার মাধ্যমে ঘরে রাখা খুবই জঘন্য ব্যাপার। এজন্যই হাদীস শরীফে উভয়ের ওপর লানত বর্ষিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে হিলা করবে এবং যার জন্য হিলা করা হবে, উভয়ের ওপরই লানত বর্ষিত হবে।” [সূত্র : মিশকাত শরীফ।]
হযরত উমর (রাযি) এর যুগে আইন ছিল, যদি কেউ এভাবে হিলা করতো, তবে তাকে সাঙ্গেসার করা হতো অর্থাৎ পাথর নিক্ষেপ করে তাকে মেরে ফেলা হতো। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের নিকট জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এক ব্যক্তি তার চাচাত বোনকে বিবাহ করে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে তাকে তিন তালাক দিয়েছে, এখন আবার হিলা করে তাকে স্ত্রীরূপে রাখতে চায়। তিনি ফাতাওয়া দিয়েছিলেন, তোমার চাচাত ভাই একসঙ্গে তিন তালাক দিয়ে আল্লাহপাকের নাফরমানি করেছে। আল্লাহ তাকে এই শাস্তি দিয়েছেন। সে শয়তানের তাবেদারি করেছে, তাই আল্লাহপাক তার জন্য আর কোন পথ বাকি রাখেন নি। সকল ইমামগণের ফাতাওয়াই এরূপ যে, শর্ত করে হিলা করা হারাম ও গুনাহে কবীরা।
No comments:
Post a Comment