বর্তমানে আধুনিক অর্থ ব্যবস্থায় সুদ এমনভাবে মিশে গেছে যে, সুদ ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনাই করা যায় না।সুদের কারণে কুরআন এবং হাদীসে কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক লেনদেন সম্পূর্ণ সুদ ভিত্তিক। তথাপি একজন মুসলমান হিসেবে সুদকে কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যাবে না। সুদকে মেনে নেওয়া আল্লাহ্র ঘোষিত কঠিন শাস্তি থেকে অমনোযোগী হওয়া তথা কুরআনের আইনকে অস্বীকার করারই নামান্তর। একজন মুসলমানের জীবন চলে যেতে পারে কিন্তু কোন অবস্থাতেই কুরআনের আইনের বিরোধিতায় নামতে পারে না। তাই সুদ সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনার প্রাক্কালে সর্বশ্রেণীর মুসলমানদের খেদমতে বিনীত আবেদন, সবাই আল্লাহর কঠিন শাস্তিকে ভয় করে পুরোপুরিভাবে সুদ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে সাধ্যমত চেষ্টা করুন।
সুদ কিঃ এক কথায় সুদের পরিচিতি হচ্ছে, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ‘রিবা’র (সরা বাকারাহ- ২৭৫ নং আয়াত দ্রষ্টব্য) বাংলা রূপ। ‘রিবা’ বা সুদ বলতে কাউকে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঋণ প্রদান করতঃ মলধনের অতিরিক্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করাকে বলা হয়। তৎকালে আরবরা তাই করতো এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে সুদের হার বাড়িয়ে দিয়ে মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হত। (তাফ্সীরে ইব্নে জারীর)।
রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যে ঋণ কোন মুনাফা টানে, তাই রিবা। (জামে সগীর)। একই সাথে তিনি কয়েক ধরনের ক্রয়-বিক্রয়কেও রিবার অন্তর্ভুক্ত করেছেন।সোনা, রূপা, গম, যব, খেজুর ও আঙ্গুর এগুলোর অদল বদল করতে হলে সমান সমান এবং নগদে হওয়া দরকার। কম বেশী কিংবা বাকী হলে তাও রিবা হবে। তৎকালীন আরবে মুযাবানা নামে বৃস্থিত ফল বৃ থেকে আহরিত ফলের বিনিময়ে অনুমান করে বিক্রয় করণ এবং ক্ষেতে অকর্তিত খাদ্যশস্য যথা গম, বুট ইত্যাদি শুকনো পরিস্কার করা অনুরূপ খাদ্য-শস্যের বিনিময়ে অনুমান করে বিক্রয় করা ‘মুহাকালা’ নামকরণে এর প্রচলন ছিল।
সুদের আয়াত নাযিলের পর রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পদ্ধতিদ্বয়কে সুদের অন্তর্ভুক্ত বলে ঘোষণা দেন। (ইব্নে কাসীর)। এতে প্রতিবিধানযোগ্য বিষয় ছিল এই যে, বিশেষ করে উপরোক্ত ছয়টি বস্তুর মধ্যেই সুদ সীমাবদ্ধ, না এগুলো ছাড়া আরও কিছু বস্তু এ নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত হবে? হযরত উমর ফারুক (রাযি.) এসব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েই নিন্মোক্ত উক্তি করেছিলেন যে, সুদের আয়াত হচ্ছে কুরআনের সর্বশেষ আয়াতসমহের অন্যতম।
সুদ সম্পর্কে পূর্ণ বিবরণ প্রদান করার পর্বেই রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেছেন। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক পদপে জরুরী। সুদ তো অবশ্যই বর্জন করতে হবে।তদুপরি যেসব ব্যাপারে সুদের সন্দেহও হয়, সেগুলোও পরিহার করা উচিত। (আহ্কামুল কুরআন,জাস্সাস, ইব্নে কাসীর)।
সুদের প্রকারঃ হযরত ইমাম রাযী (রাহ্.) তাফ্সীরে কবীরে লিখেছেন, রিবা দু’প্রকার- (১) বাকী বিক্রয়ে রিবা এবং (২) নগদ ক্রয়-বিক্রয়ে বেশী নেওয়ার রিবা।
আহ্কামুল কুরআনে বলা হয়েছে, রিবা দু’প্রকার। একটি ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে অপরটি ক্রয়-বিক্রয় ছাড়া। দ্বিতীয় প্রকারই ছিল জাহিলিয়্যাত যুগের রিবা। অর্থাৎ যে ঋণে মেয়াদের হিসেবে কোন মুনাফা নেওয়া হয়, তা-ই রিবা।
হযরত ইমাম ত্বাহাভী (রাহ্.) ‘র্শহে মাআনিউল আসার’ গ্রন্থে রিবা বলতে যা ঋনের উপর নেওয়া হত তাকেই বুঝানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এরপর হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে ক্রয়-বিক্রয়ে কম বেশী করণ রিবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে ফিক্বাহ্বিদগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
হযরত শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ দেহ্লভী (রাহ্.) ‘হুজ্জাতুল বালেগাহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, এক প্রকার রিবা হচ্ছে সরাসরি সুদ এবং অন্য প্রকার পরো ও নির্দেশগত সুদ। সত্যিকারের সুদ হল, ঋণের চেয়ে বেশী নেওয়া এবং নির্দেশগত সুদ বলতে হাদীসে বর্ণিত ক্রয়-বিক্রয়ে বেশী নেওয়া। এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে- রিবা বা সুদ শুধু বাকী দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সত্যিকার ও আসল সুদ যাকে সাধারণভাবে সুদ বলা হয়, তা বাকী দিয়ে মুনাফা নেওয়াকেই বলা হয়। এছাড়া যত প্রকার সুদ এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে, সবগুলো নির্দেশগত সুদের অন্তর্ভুক্ত।
সুদের অবৈধতা ও তার বিধি-বিধানঃ সরা বাক্বারার ২৭৫ নং আয়াত থেকে পরবর্তী ছয়টি আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা সুদের অবৈধতা ও বিধি-বিধান সম্পর্কে স্পষ্ট হুকুম নাযিল করেন।আয়াতসমহের সরল অর্থ হচ্ছে-
* “যারা সুদ খায়, তারা ক্বিয়ামতে দণ্ডায়মান হবে, যেভাবে দণ্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদ নেওয়ারই মত। অথচ আল্লাহ্ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার প থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে। পর্বে যা হয়ে গেছে তা তার, তার ব্যাপার আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।”
* “আল্লাহ্ তাআলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ্ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে।”
* “নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎকাজ করেছে, নামায প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং যাকাত প্রদান করেছে, তাদের জন্য তাদের পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। তাদের কোন শঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না।”
* “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো এবং সুদের যে সব বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ করো, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।”
* “অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না করো, তবে আল্লাহ্ ও রাসলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তাওবা করো, তবে তোমরা নিজের মলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারো প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না।”
* “যদি খাতক অভাবগ্রস্ত হয়, তবে তাকে সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত সময় দেওয়া উচিত। আর যদি মা করে দাও, তবে তা খুবই উত্তম। যদি তোমরা উপলব্ধি করো। (সরা বাক্বারা- ২৭৫ থেকে ২৮০নং আয়াত)।
বর্ণিত ছয়টি আয়াতের প্রথম আয়াতেই ক্বিয়ামতের ময়দানে সুদখোরেরা শয়তানের আসর করার মত দিশেহারা হয়ে উঠার কথা বলা হয়েছে। সুদ খাওয়া বলতে সুদ গ্রহণ করা এবং এটা নিজের জীবনে তথা পারিবারিক জীবনে বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করাকে বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ এ আয়াতের মাধ্যমে সুদ হারাম এবং ক্রয়-বিক্রয়কে বৈধ ঘোষণা করেছেন। তৎকালীন সুদখোররা বলতো ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেওয়ার মত। এ আয়াত নাযিলের পরে যারা সুদ গ্রহণ করবে তারা অবশ্যই জাহান্নামী হবে এবং সুদকে ক্রয়-বিক্রয়ের তুল্য বলার অপরাধে অর্থাৎ উক্ত উক্তি কুফ্র হওয়ার কারণে চিরকাল তারা জাহান্নামে থাকবে। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা সুদকে হারাম এবং ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ঘোষণা করেছেন। আর এ দু’টি বিষয় কখনোই সমতুল্য হতে পারে না।
দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ্ তাআলা সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান খয়রাতকে বর্ধিত করেন। সদকা খয়রাত কোনরূপ বিনিময় ছাড়াই নিজ অর্থ সম্পদ অপরকে দেওয়া হয় এবং সুদে কোন বিনিময় ছাড়াই অপরের অর্থ নিয়ে নেওয়া হয়। আল্লাহ্ সুদ দ্বারা অর্জিত ধন-সম্পদ কিংবা তার বরকত মিটিয়ে দেন এবং দান-খয়রাতকারীর ধন-সম্পদ কিংবা তার বরকত বাড়িয়ে দেন।বরকত মিটিয়ে দেওয়া এবং বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাখ্যায় এসেছে যে, সুদখোরের ধন-সম্পদ পরকালে কোন কাজে আসবে না, বরং বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। পান্তরে দান খয়রাতকারীদের ধন-সম্পদ তাদের জন্য চিরস্থায়ী নিয়ামত ও শাšি লাভের উপায় হবে।
তৃতীয় আয়াতে নামায ও যাকাতের নির্দেশের প্রতি অনুগত ও সৎকর্মশীল মু’মিনদের বিরাট পুরস্কার ও পরকালীন সুখ-শান্তি বর্ণিত হয়েছে।
চতুর্থ আয়াতে বলা হয়েছে যে, সুদের নিষেধাজ্ঞা অবতীর্ণ হওয়ার পর সুদের যেসব বকেয়া অর্থ অপরের কাছে প্রাপ্য রয়েছে, সেগুলোর লেনদেনও হারাম। তবে তাওবা করার পর মলধন ফেরত পাওয়া যেতে পারে কিন্তু বকেয়া সুদ কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এ আয়াতের প্রেক্ষিতেই রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিমদের কাছে মুসলমানদের প্রাপ্য সব বকেয়া সুদ মওকুফ করে দেন।
পঞ্চম আয়াতে সুদ সম্বন্ধে এ নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণকারীদেরকে কঠোর শাস্তির কথা শোনানো হয়েছে এবং আল্লাহ্-রাসলের প থেকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একমাত্র কুফ্র ছাড়া অন্য কোন বৃহত্তম গুনাহের জন্য কুরআনে এত বড় কঠিন শাস্তির কথা উচ্চারিত হয়নি। এ আয়াতের শেষে ভবিষ্যতে সুদ ছেড়ে দিতে কৃতসংকল্প হলেই মলধন ফেরত পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। অন্যথায় নয়।
ষষ্ঠ আয়াতে বলা হয়েছে, তোমার খাতক যদি রিক্ত হস্ত হয়, ঋণ পরিশোধে সম না হয় তবে শরীয়তের নির্দেশ মত তাকে স্বাচ্ছন্দ্যশীল হওয়া পর্যন্ত সময় দেওয়া বিধেয়। যদি খাতককে ঋণ থেকে রেহাই দেওয়া হয় তবে তো হবে অতি উত্তম।
সাধারণতঃ সুদখোরদের অভ্যাস খাতক নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে সুদের অঙ্ক আসলের সাথে যোগকরে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের হার আগের চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া।
সরা আল ইমরানের ১৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা সুদ খেয়ো না দ্বিগুণ চতুর্গুণ এবং আল্লাহ্কে ভয় করো, আশা করা যায় তোমরা সফল হবে।”
কুরআনের সাতটি আয়াত এবং চল্লিশটির বেশী হাদীস ও ইজমা দ্বারা সুদের অবৈধতা বর্ণনা করা হয়েছে। এতণের আলোচনায় একজন মুসলমান হিসেবে সুদ গ্রহণযোগ্য না সর্বোতভাবে পরিত্যাজ্য সে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেল।
দুঃখজনক হলেও বিস্ময়ের ব্যাপার হল, সুদ গ্রহণকারীকে আল্লাহ্ এবং রাসল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার কথা বলার এবং জাহান্নামে চির অবস্থানের কথা ঘোষণা করার পরও একজন মুসলমান কি করে সুদের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে?
রাসূলল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সুদ দাতা, সুদ গ্রহীতা, সুদের সাক্ষী এবং লেখকের প্রতি আল্লাহর লা’নত।” লা’নত বলতে আল্লাহ্ তাআলার দয়া থেকে বঞ্চিত হওয়া।
প্রকৃতপে যদি আমরা কুরআন এবং পরকালে বিশ্বাসী হই, তবে অবশ্যই সুদকে মহামারী আকারে প্রসার লাভ করতে দেখে এরূপ মনে করা ঠিক নয় যে, সুদের ব্যবসা বর্জন করা অর্থনৈতিক আত্মহত্যার নামান্তর এবং এ যুগের লোক সুদের ব্যবসায়ের ব্যাপারে ক্ষমার্হ।
যাকাত ব্যবস্থা ও ইসলামের মীরাস এবং সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন ব্যবস্থা প্রভৃতি কার্যক্রম এবং সব লেনদেন ইসলামিক পদ্ধতিতে পুরোপুরিভাবে প্রবর্তন এবং সুদমুক্ত করতে পারলে সুদ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।
আমাদের সমাজে অনেক লোককে দেখা যায়, পরহেযগার এবং নামাযী হয়েও সুদের আয় দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এনজিও’দের সুবাদে আজ সুদ প্রায় প্রতি ঘরে পৌঁছে গেছে। ব্যাংকে পেনশন স্কীম এবং পোস্ট অফিসে পেনশন স্কীম এবং ফিক্সড ডিপোজিট রেখে অনেক মুসলমানই আজ সুদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আছেন। অথচ কুরআন-হাদীসের বর্ণনা মতে সুদখোরদের জন্য কোন নাজাতের পথ খোলা নেই; যদি না তারা সুদ পরিত্যাগ করে। বাস্তবে নামে শুধু মুসলমান দাবী করে সুদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে কোন আমলই তার উপকারে আসবে না।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, একজন মুসলমান কখনো সুদখোর হতে পারে না, আর সুদখোরের দলে নাম অন্তর্ভুক্ত হলে তিনি আর মুসলমানের দলে থাকেন কি-না,শরীয়তের বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কিরামই ভাল বলতে পারেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কুরআন-হাদীসের বর্ণনার প্রেক্ষিতে আমাদেরকে সুদের লেনদেনে কোনরূপ সহযোগিতা বা অর্থ লগ্নি পরিহার করা ঈমানের মৌলিক বা গুরুত্বপর্ণ দাবী। এ ব্যাপারে কোনরূপ আপোষ কিংবা বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে না। একজন মুসলমান হিসেবে কখনোই সুদ গ্রহণ করা যাবে না, বরং সর্বাবস্থায় সুদকে পরিহার করতে হবে।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে সুদের অবৈধতা জ্ঞাত হওয়ার পরও যারা এ জীবন তথা আখেরাত বিনাশী ভাইরাস থেকে নিজেকে রা করতে এগিয়ে আসবেন না, তাদেরকে আল্লাহর মর্জির উপর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই।
তাই আসুন, আমরা সবাই সুদ থেকে বেঁচে থাকতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ্ তাআলা মেহেরবানী করে সুদের বিষবাষ্প থেকে আমাদেরকে হিফাযত করুন এবং ইসলামী অর্থনীতি অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন॥
মাসিক মইনুল ইসলাম
No comments:
Post a Comment