Sunday, 21 September 2014

কতিপয় কবীরা গুনাহের বিস্তারিত বিবরণ (১-৪)

আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন:

إِنْ تَجْتَنِبُوا كَبَائِرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ

তোমারা যদি নিষিদ্ধ বড় বড় পাপগুলো হতে বিরত থাক, তবে তোমাদের ছোট ছোট পাপগুলোকে আমি মাফ করে দেব। [সূত্র: সূরা নিসা, আয়াত ৩১]

এ আয়াতের আলোকে এখানে কতিপয় গুনাহে কবীরার সবিস্তারে আলোচনার আশা করছি, যাতে সেসব বিস্তারিতভাবে জেনে সেই সকল পাপকাজ হতে আত্মরক্ষা করা সহজ হয়।

১. শিরক : এটা সর্বাপেক্ষা মহাপাপ। এর বিপরীত তাওহীদ। দুনিয়ার জীবনেই তাওবা করে তাওহীদ গ্রহণ না করে এই পাপের বোঝা নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে শিরক পাপের শাস্তি স্থায়ী জাহান্নাম হতে বাঁচার অন্য কোন উপায় নেই।

২. উকূকুল ওয়ালিদাইন : অর্থাৎ মা-বাবার নাফরমানি করে মা-বাবার মনে কষ্ট দেওয়া। এটা অন্যতম কবীরা গুনাহ। এর বিপরীত বিররুল ওয়ালিদাইন। অর্থাৎ মা-বাবার খিদমত করা অনেক বড় নেকী।

৩. ক্বাত‘ই রেহেম : অর্থাৎ এক মায়ের পেটের ভাই-বোনদের সঙ্গে অসদ্ব্যবহার করা। মায়ের পেটের বলতে দাদীর পেটের চাচা, ফুফু, নানীর পেটের মামা, খালা এবং ভাই-বোনদের ছেলেমেয়ে, ভাতিজা, ভাতিজী, ভাগ্নে ভাগ্নী, সবাইকেই বোঝায়। অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়-স্বজন| যে যত বেশি নিকটবর্তী, তার হক তত বেশি। ক্বাত‘ই রেহেমী করা কবীরা গুনাহ। এর বিপরীত সিলাহ রেহমী বা আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখা অনেক বড় সাওয়াবের কাজ।

৪. যিনা : অর্থাৎ নারীর সতীত্ব নষ্ট করা, পুরুষের চরিত্র নষ্ট করা, ব্যভিচার করা, এটা অত্যন্ত জঘন্য কবীরা গুনাহ। এর বিপরীত নারীর সতীত্ব রক্ষা করা ও পুরুষের চরিত্রকে পবিত্র রাখা ফরয। নারীর সতীত্ব ও পুরুষের চরিত্র পবিত্র রাখার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা কুরআন শরীফের মধ্যে পর্দা বিধান করেছেন এবং বেপর্দার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। নারী জাতির জন্য পর্দা অবলম্বন ফরয এবং উত্তেজনা বর্ধনকারী, যৌন আবেদন সৃষ্টিকারী যাবতীয় জিনিস যেমন অশ্লীল ছবি, নাটক থিয়েটার, সিনেমা, বায়োস্কোপ, টিভি, ভিসিআর ইত্যাদি দেখা হারাম। তদ্রূপ বালকদের সঙ্গে কু-কর্ম করা যিনার চেয়েও বড় পাপ এবং এর শাস্তিও ভয়ানক। বিবাহিত অবস্থায় যিনা করলে এবং তা স্বীকার করলে অথবা চারজন সত্যবাদী সাক্ষীর দ্বারা তা প্রমাণিত হলে ইসলামী হুকুমতে তার শাস্তি রজম অর্থাৎ পাথর মেরে প্রাণে বধ করে ফেলা। আর অবিবাহিত অবস্থায় যিনা প্রমাণিত হলে তার শাস্তি একশত বেত্রাঘাত। আর বালকদের সাথে কুকর্মকারীর শাস্তি হচ্ছে তাকে আগুণ দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া।


হযরত ঈসা (আ) একদিন ভ্রমণকালে দেখতে পেলেন-একটি কবরের মধ্যে একজন মানুষকে আগুণ দ্বারা জ্বালানো হচ্ছে। তিনি আল্লাহর নিকট এর ভেদ জানতে চাইলে আল্লাহর নির্দেশে সেই লোকটি বললো, এই আগুণ সেই বালকটি, যাকে আমি ভালোবাসতাম। তারপর ক্রমান্বয়ে আমি বালকটির সঙ্গে কুকর্ম করে বসলাম। সে কারণে কিয়ামত পর্যন্ত আমাকে এরূপ শাস্তি ভোগ করতে হবে।

No comments:

Post a Comment