প্রশ্ন :
শরীয়তের দৃষ্টিতে “নাহী আনিল মুনকার” অর্থাৎ ! অসৎ কাজে বাধা
প্রদান ফরজে কিফায়া এবং গুরুত্বপুর্ণ ইবাদত । কিন্তু তাবলীগের লোকেরা শুধু সৎ
কাজের আদেশ দেয় । কখনও নাহী আনিল মুনকারের ব্যাপারে কিছু বলেন না বা বাতিলের
বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ, প্রতিরোধ বা জিহাদ কোনটাই শরীক হন না । তাদের এরূপ করা কি
ঠিক?
উত্তরঃ “
তাবলীগের লোকেরা নাহী আনিল মুনকার তথা অসৎ কাজের নিষেধ করেন না ” এ কথাটি ঠিক নয়
। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে সৎ কাজের আদেশের মাধ্যমে অসৎ কাজের নিষেধও হয়ে যায় । যেমনঃ
তারা নামায পড়ার জন্য মানুষকে দা‘ওয়াত দেন , উৎসাহ প্রদান করেন । যার ফলে বহু লোক
নামাযী হয়ে যায় । এখন তাদের এই দা‘ওয়াতের মাধ্যমে নামায না পড়া যে “মুনকার”
বা অন্যয় কাজ ছিল, হেকমতের সাথে সেই মুনকারের বাঁধা দেয়া হয়ে যায় । কোন প্রতিবাদ
বা সংঘর্ষের প্রয়োজন হয় না । এই পদ্ধতিতে তারা অসংখ্য “নাহী আনিল মুনকার” করে
থাকেন । এখন বাকী রইল এমন কতগুলো মুনকার-যা তাবলীগের দ্বারা তৎক্ষনাৎ
প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করা যায় না অথচ সেটারও প্রতিবাদ-প্রতিরোধ মুসলমানদের জন্য
ফরজে কিফায়া ।
তবে
একথা ঠিক, তাবলীগের মাধ্যমে এই ফরজে কিফায়াটা করা সম্ভব হবে না । কারণ হল, এটা
যেহেতু ফরজে কিফায়া, তাই তা সকলের জন্য করা জরুরী নয় । আর শুধু এক তাবলীগ
পক্ষ থেকে সব ধরনের কাজ করাও সম্ভব নয় । মুসলমানদের রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক যে কোন
জামা‘আতের পক্ষ থেকে এটা করা যায় । তাতে সকলেই ফরজে কিফায়ার দায়িত্ব থেকে মুক্তি
পেয়ে যায় । যেমনঃ মুরতাদ সালমান রুশদী, ডঃ আহমদ শরীফ ও তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে
মুসলমানরা প্রতিবাদ করেছে এবং করছে ।
তাবলীগের
মেহনতটা বিশ্বজুড়ে একটা নীরব আন্দোলন। এই আন্দোলন বাস্তবায়িত হলে, সে দিন
মুসলমানদের মৌলিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে । বিভিন্ন হেকমতের কারণে কিছু
“নাহী আনিল মুনকার” তাবলীগের নামে করা সত্যই মুশকিল । তাতে ফরজে কিফায়া করতে গিয়ে
তাদের অনেক জরুরী কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে যেতে পারে । এই মজবুরীর কারণে তাবলীগের নামে
এ জাতীয় খিদমত আঞ্জাম দেয়া যায় না। এ জন্য হযরত শাইখ যাকারিয়া (রহঃ) তাবলীগী
জিম্মাদারদেরকে বলেতেন, তারা যেন সমাজের মুনকারাতের (অন্যায়-অপকর্মের)
ব্যাপারে মাথা না ঘামান। বরং তারা যে কাজ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন, সেই কাজ নিয়েই যেন
চলতে থাকেন । অতঃপর তিনি হযরত থানবী (রহঃ)-এর উদ্বৃতি দিয়ে বলেন যে. হযরত থানবী
(রহঃ) বলতেন : (বিশ্বব্যাপী কাজের স্বার্থে) তারা যখন মুনকারাতের ব্যাপারে
প্রতিবাদ না করার উসূল বানিয়েছেন, তো তাদের সেই উসূলের উপর থাকা উচিৎ।
(মালফুজাতে শাইখ (রহঃ)- ২৮)
বাস্তবিকপক্ষে
অনেক সময় এমন ঘটে যে, অনেক কাজ এক সাথে করতে গেলে কোনটাই সুন্দরভাবে সম্ভব হয় না।
বরং সবটাই অসুন্দর হয়ে যায় , বা সম্পূর্ণটা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে । এর কারণে
শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে বিশেষ বিশেষ সাবজেক্টের ভিত্তিতে বড় বড় মাদ্রাসা কলেজ
ভার্সিটিগুলোকে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবগুলো সাবজেক্ট রাখা
হয় না । (এটা শুধু উদহারণ স্বরূপ বলা হল ।)
No comments:
Post a Comment